০৭:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
শুক্রবারের মধ্যে জুলাই সংবিধানের চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশের আশা স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নভেম্বরের মধ্যে চায় জামায়াত হাসিনার বিরুদ্ধে আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এনবিআরের সিদ্ধান্ত: এমপি কোটার ৩০ বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে হস্তান্তর পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয়

সাড়ে ৭ লাখ কোটি টাকার ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ ছাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশ্লেষণে

২০২৪ সালের শেষ নাগাদ দেশের ব্যাংক খাতের ঝুঁকিপূর্ণ বা দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে নিখুঁত ৭ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরটির তুলনায় প্রায় ২ লাখ ৮১ হাজার কোটি টাকা বেশি। ২০২৩ সালের শেষে এই ধরনের ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য প্রকাশিত ‘ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট ২০২৪’-এ এই তথ্যগুলো উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩ সালের শেষে এই দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা, যা এক বছরে ৪৪.২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। আইএমএফের সংজ্ঞা অনুযায়ী, খেলাপি, পুনঃতফসিল ও অবলোপনকৃত ঋণগুলো একসঙ্গে গণ্য করা হয় দুশ্চিন্তাজনক ঋণ বা ‘দুর্দশাগ্রস্ত ঋণ’ হিসেবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষের দিকে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা, পুনঃতফসিলকৃত ঋণ ছিল ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা এবং রাইট-অফকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৬২ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে দেওয়া ঋণগুলো এখন খেলাপির হাতে পড়ে গেছে। আগের সময় এসব তথ্য গোপন থাকলেও, বর্তমানে আইএমএফের চাপের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিতভাবে এসব তথ্য প্রকাশ করছে। প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, ২০২৪ সালে দেশের ব্যাংক খাত ব্যাপক চাপের মধ্যে পড়েছে, বিশেষ করে মূলধন পর্যাপ্ততার ক্ষেত্রে। সিআরএআর (ক্যাপিটাল টু রিস্ক-ওয়েইটেড অ্যাসেট রেশিও) হার ৩.০৮ শতাংশে নেমে এসেছে, যা আন্তর্জাতিক মানের থেকে অনেক কম, যেখানে কমপক্ষে ১০ শতাংশ হওয়া দরকার। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক ও কিছু ইসলামী ব্যাংক। মূলধন অনুপাত ও লিভারেজ অনুপাত যথাক্রমে ০.৩০ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ব্যাংকিং খাতের কাঠামোগত দুর্বলতা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার অভাব স্পষ্ট করে দেয়। তবে ব্যাংকখাতের তরলতা পরিস্থিতি এখনো মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। অ্যাডভান্স-ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) ৮১.৫৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত সীমার মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, দেশের অর্থনৈতিক খাত সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও, উচ্চ হার বিশ্লেষণের জন্য বড় বাধা হলো খেলাপি ঋণ, বৈদেশিক মুদ্রার চাপ এবং দুর্বল শাসন ব্যবস্থার অভাব। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সময়োচিত নীতিমালা, কঠোর তদারকি এবং প্রযুক্তিনির্ভর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা সম্ভব।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

সাড়ে ৭ লাখ কোটি টাকার ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ ছাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশ্লেষণে

প্রকাশিতঃ ১০:৪৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

২০২৪ সালের শেষ নাগাদ দেশের ব্যাংক খাতের ঝুঁকিপূর্ণ বা দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে নিখুঁত ৭ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরটির তুলনায় প্রায় ২ লাখ ৮১ হাজার কোটি টাকা বেশি। ২০২৩ সালের শেষে এই ধরনের ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য প্রকাশিত ‘ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট ২০২৪’-এ এই তথ্যগুলো উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩ সালের শেষে এই দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা, যা এক বছরে ৪৪.২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। আইএমএফের সংজ্ঞা অনুযায়ী, খেলাপি, পুনঃতফসিল ও অবলোপনকৃত ঋণগুলো একসঙ্গে গণ্য করা হয় দুশ্চিন্তাজনক ঋণ বা ‘দুর্দশাগ্রস্ত ঋণ’ হিসেবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষের দিকে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা, পুনঃতফসিলকৃত ঋণ ছিল ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা এবং রাইট-অফকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৬২ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে দেওয়া ঋণগুলো এখন খেলাপির হাতে পড়ে গেছে। আগের সময় এসব তথ্য গোপন থাকলেও, বর্তমানে আইএমএফের চাপের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিতভাবে এসব তথ্য প্রকাশ করছে। প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, ২০২৪ সালে দেশের ব্যাংক খাত ব্যাপক চাপের মধ্যে পড়েছে, বিশেষ করে মূলধন পর্যাপ্ততার ক্ষেত্রে। সিআরএআর (ক্যাপিটাল টু রিস্ক-ওয়েইটেড অ্যাসেট রেশিও) হার ৩.০৮ শতাংশে নেমে এসেছে, যা আন্তর্জাতিক মানের থেকে অনেক কম, যেখানে কমপক্ষে ১০ শতাংশ হওয়া দরকার। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক ও কিছু ইসলামী ব্যাংক। মূলধন অনুপাত ও লিভারেজ অনুপাত যথাক্রমে ০.৩০ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ব্যাংকিং খাতের কাঠামোগত দুর্বলতা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার অভাব স্পষ্ট করে দেয়। তবে ব্যাংকখাতের তরলতা পরিস্থিতি এখনো মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। অ্যাডভান্স-ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) ৮১.৫৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত সীমার মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, দেশের অর্থনৈতিক খাত সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও, উচ্চ হার বিশ্লেষণের জন্য বড় বাধা হলো খেলাপি ঋণ, বৈদেশিক মুদ্রার চাপ এবং দুর্বল শাসন ব্যবস্থার অভাব। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সময়োচিত নীতিমালা, কঠোর তদারকি এবং প্রযুক্তিনির্ভর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা সম্ভব।