সব পর্যায়ের জল্পনা-কল্পনা শেষে অবশেষে উসমান দেম্বেলই হলো ব্যালন ডিঅর ট্রফির অধিকারী। এই প্রাপ্তিতে সপ্তম ফরাসি ফুটবলার হিসেবে তিনি এটি জিতলেন, যা একটি অসাধারণ অর্জন। দেম্বেল এর আগে ফরাসিদের মধ্যে বাস্তবায়িত এই ট্রফি জেতার তালিকায় ছিলেন রাইমন্ড কোপা, মিশেল প্লাতিনি, জ্যাঁ পিয়েরে পাপিন, জিনেদিন জিদান এবং করিম বেনজেমা। এই ছয়জন ফুটবলার মিলিতভাবে মোট আটবার এই পুরস্কার অর্জন করেছেন। যেখানে প্লাতিনি একাই জিতেছেন তিনবার, অন্যরা একবার করে এই কীর্তি অর্জন করেন।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কেননা, বর্তমানে ফ্রান্সের এই অর্জনের মাধ্যমে তারা মোট আটবার ব্যালন ডিঅর জেতার রেকর্ডে পৌঁছে গেছে, যা ছুঁয়ে ফেলেছে আর্জেন্টিনার পুরোনো রেকর্ডকে। এমনকি, হোক না ভিন্ন ভাষা বা সংস্কৃতি, তবে ব্যালন ডিঅর জেতার তালিকায় ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা দুই দেশই সমানভাবে স্থান করে নিয়েছে। তবে, পার্থক্য এখানেই যে, যেখানে ফ্রান্সের জন্য ৬ জনের সমন্বয়ে এই জয় এসেছে, সেখানে আর্জেন্টিনার জন্য এককভাবেই জিতেছেন লিওনেল মেসি, যিনি আটবার এই পুরস্কার জিতেছেন। এটি ফুটবল যুগে অন্যতম বৃহৎ ব্যক্তিগত অর্জন, যা রেকর্ড বইয়ে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
মেসি প্রথম এই পুরস্কার পান ২০০৯ সালে। এরপর ধাপে ধাপে তিনি আরও তিন বার সফল হন ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালে। এরপর তিন বছরের বিরতিতে আবার ২০১৫ সালে এই ট্রফি জেতেন। তার পরে পরের তিনটি জয় আসে ২০১৯, ২০২১ ও ২০২৩ সালে।
অন্যদিকে, ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রথম ব্যালন ডিঅর জেতা হয় রাইমন্ড কোপা দ্বারা। এরপর ৮০ এর দশকে বেশকিছু বছর তিনি এই পুরস্কার অর্জন করেন। মিশেল প্লাতিনি হ্যাটট্রিকের মতো অবদান রাখেন ১৯৮৩, ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে। জ্যাঁ পিয়েরে পাপিন ১৯৯১ সালে এই ট্রফি জিতেছেন।
জিদান, যিনি ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপ জেতার পর এই ট্রফি অর্জন করেন, তার পরও দীর্ঘ বিরতিতে ফিরে ২০২২ সালে আবার এই সম্মানা লাভ করেন করিম বেনজেমার মাধ্যমে। এবার সব শেষে দেম্বেলের ধারাবাহিক সফলতা যুক্ত হলো।
বিরোধীয় তালিকায়, চারটি দেশ—জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল ও ইতালি—ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার পরে যথাক্রমে দ্বিতীয় স্থান ভাগ করে নিয়েছে। বিশেষ করে, পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এই পুরস্কার পাঁচবার জিতেছেন, যা এককভাবে সর্বোচ্চ। অন্যদিকে, ইউসেবিও ও লুইস ফিগো ৫ বার এই ট্রফি অর্জন করেছেন। ব্রাজিলের রোনালদো নাজারিও ২ বার এই পুরস্কার জেতেন। সাধারণভাবে, এই সংখ্যার ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করলে দেখা যায় দক্ষিণ আমেরিকার দেশ যেমন আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের ইতিহাসে এই পুরস্কার বেশ গুরুত্বপূর্ণ।