তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত বহুল প্রত্যাশিত মাওলানা ভাসানী সেতু আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। পূর্বে এটি তিস্তা সেতু নামে পরিচিত ছিল। এই সেতুটি কুড়িগ্রাম এবং গাইবান্ধা জেলার মধ্যে নতুন সংযোগ স্থাপন করবে, যা অঞ্চলের যোগাযোগ ও অর্থনীতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিবে।
সাঁট সাজানো প্রস্তুতিপর্বের অংশ হিসেবে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব দুপুরে প্রধান অতিথি হিসেবে সেতুটি উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী জানিয়েছেন, উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ করা হয়েছে।
উদ্বোধনের খুশি মঞ্চ ও প্যান্ডেলসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক সুবিধা প্রস্তুত করা হয়েছে, যাতে অংশগ্রহণকারীরা আস্থার সাথে উৎসবের আমেজ উপভোগ করতে পারেন। এই বিশেষ দিনে এলাকাজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রায় ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ঘাট এবং কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চিলমারী ঘাটের মধ্যে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত। এলজিইডি সূত্র জানিয়েছে, এই সেতু দুই জেলার মধ্যে যাতায়াতের সময় ও দূরত্ব কমিয়ে আনে, আনুমানিক ১০০ কিলোমিটার পথ সংক্ষিপ্ত হবে।
চুক্তি অনুযায়ী, সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ও এলজিইডির তত্ত্বাবধানে চীনা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। মোট নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৮৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, সংযোগ সড়কের জন্য ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, নদী ব্যবস্থাপনার জন্য ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং ভূমি অধিগ্রহণে ৬ কোটি টাকা।
সেতুটিতে মোট ৩০টি পিলার রয়েছে, যার মধ্যে ২৮টি নদীর ভেতরে এবং ২টি নদীর তীরে স্থাপিত। নদী শাসন প্রকল্পের আওতায় উভয় তীরের মধ্যে ৩.১৫ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
আরও উল্লেখ্য যে, মোট ৫৭.৩ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণাধীন রয়েছে। এর মধ্যে সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার এবং চিলমারী মাটিকাটা জংশন থেকে সেতু পর্যন্ত ৭.৩ কিলোমিটার।
এলজিইডি সূত্র জানিয়েছে, এই সেতুটি রংপুর শহরসহ কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা শহরের মধ্যে কৃষিপণ্য পরিবহনকে সহজতর করবে। এতে কৃষকরা সময়ে পণ্য বাজারে পৌঁছাতে পারবেন, তাদের আয়ের পাশাপাশি অঞ্চলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।