বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, শুধু বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা নয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও যারা ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করতে চান, তারা সবাই এখন নির্বাচনের উপর তাকিয়ে আছেন। তিনি জানান, তাদের সিদ্ধান্ত এখন পুরোপুরি স্থগিত রয়েছে, কারণ তারা মনে করছেন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কোনো বিনিয়োগ করবেন না। নির্বাচনের পরেই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে, যা অনেক বিনিয়োগকারী উৎসাহ দেখাচ্ছেন। সবাই অপেক্ষা করছেন, কবে নির্বাচন হবে এবং তারপর তারা তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন।
গতকাল রোববার এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে, যেখানে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতাদের সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। ঐ বৈঠকে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন (স্বল্পোন্নত রাষ্ট্রের তালিকা থেকে উত্তরণের জন্য প্রস্তুতি) ও শ্রম আইনের বিষয়গুলো বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ব্যবসা-বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া অগ্রগতির ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে ঝুঁকি তৈরি করছে। সেই সঙ্গে, তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য এই উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, এবং এ বিষয়টি জাতিসংঘের কাছে তুলে ধরার জন্য একটি চিঠি দেওয়ার সুপারিশ করেন।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, তৈরি পোশাক শিল্পের দীর্ঘমেয়াদী বিকাশের জন্য এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি এখনও পর্যাপ্ত নয়। বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে দেশের মূল উদ্বেগ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের ডিফামেন্ট এবং শ্রম আইনের সংশোধনী। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে নেত্রী মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম একবারে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করবেন। তারা চান, আগামী তিন বছর জন্য ওই উত্তরণ ঠেকিয়ে রাখা, যাতে ব্যবসা এবং বিনিয়োগের পরিস্থিতি আরও স্থিতিশীল হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শিল্প ও ব্যবসা সংগঠনের নেতারা, যাঁরা ভবিষ্যতের পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন উদ্বেগের বিষয় তুলে ধরেন। সকলের একমত যে, সময়ের প্রয়োজন অনুযায়ী পরিস্থিতি মোকাবেলা করে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে না পারলে বিনিয়োগ ও ব্যবসার ভীতি বাড়বে।