০৬:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয় আওয়ামী লীগের বিচারকাজের জন্য আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু জয়পুরহাটের কানাইপুকুর গ্রামে বিরল শামুকখোল পাখির অভয়ারণ্য সিইসির মনে অবস্থান: এবারের নির্বাচন জীবনশেষের সুযোগ শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়ার প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ জাতিসংঘের অভিবাসী সমন্বয়কের

সবজির বাজারে উত্তাপ কাটছে না: দাম বাড়ছেই

প্রায় তিন মাস ধরে সবজির বাজারে দুর্দশা চলছে। এই দীর্ঘ সময় ধরে বাজারে উত্তাপের কারণে সবজির দাম আরও বেড়েছে। বেশিরভাগ সবজির মূল্য এখন প্রায় ১০০ টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছে। সেই সঙ্গে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে এখন ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় পৌঁছেছে, যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খুবই চিন্তার কারণ। বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, পূজার কারণে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ থাকায় এবং টানা বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সাধারণ ক্রেতারা মনে করেন, বাজারে সবকিছুর দামই এখন বেশি, যা বেশ কিছু সময় ধরে চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বাজার তদারকির অভাবই মূল কারণ বলে তারা মনে করছেন।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজারে দেখা গেছে, বেশ কিছু সপ্তাহ ধরে নাগালের বাইরে চলে যাওয়া বেগুনের দাম এখন আরও বাড়ছে। ৭০ টাকার গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২২০ টাকায়, যা আগের তুলনায় দ্বিগুণ। এ ছাড়া লম্বা ও সাদা গোল বেগুনের দাম বেড়ে যথাক্রমে ১০০ ও ১৪০ টাকা কেজিতে এসেছে। এদিকে, গাজর, টমেটো, ঢ্যাঁড়শ, বরবটি, করলা, ধুন্দল এবং কুমড়োর দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। যেমন, গাজর এখন ১২০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৮০-৯০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, করলা ১০০-১২০ টাকা, এবং কুমড়ো এখন ৬০ টাকা। এছাড়া, ঝিঙা, কচুরমুখী ও কাঁকরোলের দামও যথাক্রমে ৮০, ৮০ ও ৭০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, লাউ ৭০ টাকা এবং আলু ২৫ টাকা কেজি। তবে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে কেজিতে ৭৫ টাকা আর সিমের দাম ১৬০ টাকায় নেমেছে, যা আগের তুলনায় কম।

মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাজারে ক্রেতা আবুল হোসেন বললেন, বেশ কিছু দিন ধরে দেখছি বাজারে মাছ, মাংস ও সবজির দাম বাড়ছে। আজও ক্রেতাদের উপস্থিতি কম হলেও দাম এতটাই বেশি যে সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টদায়ক। তিনি বললেন, ব্যবসায়ীদের একটি চক্র এই দাম নিয়ন্ত্রণ করে রাখে, যারা সিস্টেম করে দাম বাড়িয়ে দেয়। এ কারণে বাজারের সবজির দাম এখন প্রায় ১০০ টাকার কাছাকাছি হাটছে, আর মানুষ কিভাবে জীবন চালাবে, এটাই প্রশ্ন।

অন্যদিকে, সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগির দাম এখন কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগির দাম ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা। কোরির মাংসের দাম ১৩০০ টাকা, বকরির ১০০০ টাকা এবং গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা। বাজারে বিভিন্ন শাকসবজির দামও জেনে নেওয়া যাক: লাল শাক ২০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা (প্রতি দুই আঁটি), পুঁইশাক ৪০ টাকা, আর ডাটা শাকও ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আলু ২৫ টাকা, দেশীয় পেঁয়াজ ৭৫ টাকা কেজি।

এদিকে, গতকাল মধ্যরাত থেকে নদীতে ধরা ও বিক্রির জন্য ইলিশ মাছের ওপর যে বন্ধ ছিল, তা ঘোষণার পর চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে এক কেজি ওজনের ইলিশ এখন ২৩০০ থেকে ২৫০০ টাকা, যা আগে অনেক কম দামে বিক্রি হত। ৭০০ গ্রামের ইলিশের দাম ২১০০ টাকা, ওজনের উপর নির্ভর করে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ১৫০০ টাকা, ৩০০ গ্রামের ১১১০০ টাকা এবং ১৫০ থেকে ২০০ গ্রামের ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্য মাছের মধ্যে, চাষের শিং মাছ (আকারভেদে) ৩৫০-৫৫০ টাকা, দেশি শিং ১০০০-১২০০ টাকা, এবং রুই মাছের দাম ওজন অনুযায়ী ৪০০-৫৫০ টাকা। এর মধ্যে, মাছের অন্যান্য প্রকারের দামও বেড়েছে: মৃগেল ৩৫০-৪০০ টাকা, পাঙ্গাশ ২০০-২৩০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১৪০০ টাকা, বোয়াল ৬০০-৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০-৫৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০-৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কৈ মাছ ২২৫-২৩৫ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকা এবং পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, বট ৩৫০-৪০০ টাকা। খাসির মাংসের দাম এক কেজিতে ১২০০ টাকা। বাজারে দেশি আদা ১৪০-১৬০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা, রসুন দেশি ১০০ টাকা, ইন্ডিয়ান রসুন ১৪০ টাকা। এছাড়া, দরকারি দানার মধ্যে, দেশি মসুর ডাল ১৬০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১১১ টাকা এবং খেসারির ডাল ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবই বাজারে অস্থিতিশীলতার মধ্যে দাম বাড়ছে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের নজরদারির প্রয়োজন উল্লেখযোগ্য।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

দৌলতপুরে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান, অবৈধ জাল জব্দ ও জেলেকে জরিমানা

সবজির বাজারে উত্তাপ কাটছে না: দাম বাড়ছেই

প্রকাশিতঃ ১০:৪৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

প্রায় তিন মাস ধরে সবজির বাজারে দুর্দশা চলছে। এই দীর্ঘ সময় ধরে বাজারে উত্তাপের কারণে সবজির দাম আরও বেড়েছে। বেশিরভাগ সবজির মূল্য এখন প্রায় ১০০ টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছে। সেই সঙ্গে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে এখন ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় পৌঁছেছে, যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খুবই চিন্তার কারণ। বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, পূজার কারণে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ থাকায় এবং টানা বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সাধারণ ক্রেতারা মনে করেন, বাজারে সবকিছুর দামই এখন বেশি, যা বেশ কিছু সময় ধরে চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বাজার তদারকির অভাবই মূল কারণ বলে তারা মনে করছেন।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজারে দেখা গেছে, বেশ কিছু সপ্তাহ ধরে নাগালের বাইরে চলে যাওয়া বেগুনের দাম এখন আরও বাড়ছে। ৭০ টাকার গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২২০ টাকায়, যা আগের তুলনায় দ্বিগুণ। এ ছাড়া লম্বা ও সাদা গোল বেগুনের দাম বেড়ে যথাক্রমে ১০০ ও ১৪০ টাকা কেজিতে এসেছে। এদিকে, গাজর, টমেটো, ঢ্যাঁড়শ, বরবটি, করলা, ধুন্দল এবং কুমড়োর দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। যেমন, গাজর এখন ১২০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৮০-৯০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, করলা ১০০-১২০ টাকা, এবং কুমড়ো এখন ৬০ টাকা। এছাড়া, ঝিঙা, কচুরমুখী ও কাঁকরোলের দামও যথাক্রমে ৮০, ৮০ ও ৭০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, লাউ ৭০ টাকা এবং আলু ২৫ টাকা কেজি। তবে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে কেজিতে ৭৫ টাকা আর সিমের দাম ১৬০ টাকায় নেমেছে, যা আগের তুলনায় কম।

মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাজারে ক্রেতা আবুল হোসেন বললেন, বেশ কিছু দিন ধরে দেখছি বাজারে মাছ, মাংস ও সবজির দাম বাড়ছে। আজও ক্রেতাদের উপস্থিতি কম হলেও দাম এতটাই বেশি যে সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টদায়ক। তিনি বললেন, ব্যবসায়ীদের একটি চক্র এই দাম নিয়ন্ত্রণ করে রাখে, যারা সিস্টেম করে দাম বাড়িয়ে দেয়। এ কারণে বাজারের সবজির দাম এখন প্রায় ১০০ টাকার কাছাকাছি হাটছে, আর মানুষ কিভাবে জীবন চালাবে, এটাই প্রশ্ন।

অন্যদিকে, সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগির দাম এখন কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগির দাম ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা। কোরির মাংসের দাম ১৩০০ টাকা, বকরির ১০০০ টাকা এবং গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা। বাজারে বিভিন্ন শাকসবজির দামও জেনে নেওয়া যাক: লাল শাক ২০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা (প্রতি দুই আঁটি), পুঁইশাক ৪০ টাকা, আর ডাটা শাকও ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আলু ২৫ টাকা, দেশীয় পেঁয়াজ ৭৫ টাকা কেজি।

এদিকে, গতকাল মধ্যরাত থেকে নদীতে ধরা ও বিক্রির জন্য ইলিশ মাছের ওপর যে বন্ধ ছিল, তা ঘোষণার পর চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে এক কেজি ওজনের ইলিশ এখন ২৩০০ থেকে ২৫০০ টাকা, যা আগে অনেক কম দামে বিক্রি হত। ৭০০ গ্রামের ইলিশের দাম ২১০০ টাকা, ওজনের উপর নির্ভর করে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ১৫০০ টাকা, ৩০০ গ্রামের ১১১০০ টাকা এবং ১৫০ থেকে ২০০ গ্রামের ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্য মাছের মধ্যে, চাষের শিং মাছ (আকারভেদে) ৩৫০-৫৫০ টাকা, দেশি শিং ১০০০-১২০০ টাকা, এবং রুই মাছের দাম ওজন অনুযায়ী ৪০০-৫৫০ টাকা। এর মধ্যে, মাছের অন্যান্য প্রকারের দামও বেড়েছে: মৃগেল ৩৫০-৪০০ টাকা, পাঙ্গাশ ২০০-২৩০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১৪০০ টাকা, বোয়াল ৬০০-৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০-৫৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০-৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কৈ মাছ ২২৫-২৩৫ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকা এবং পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, বট ৩৫০-৪০০ টাকা। খাসির মাংসের দাম এক কেজিতে ১২০০ টাকা। বাজারে দেশি আদা ১৪০-১৬০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা, রসুন দেশি ১০০ টাকা, ইন্ডিয়ান রসুন ১৪০ টাকা। এছাড়া, দরকারি দানার মধ্যে, দেশি মসুর ডাল ১৬০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১১১ টাকা এবং খেসারির ডাল ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবই বাজারে অস্থিতিশীলতার মধ্যে দাম বাড়ছে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের নজরদারির প্রয়োজন উল্লেখযোগ্য।