০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয় আওয়ামী লীগের বিচারকাজের জন্য আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু জয়পুরহাটের কানাইপুকুর গ্রামে বিরল শামুকখোল পাখির অভয়ারণ্য শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়ার প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন সিইসির মনে অবস্থান: এবারের নির্বাচন জীবনশেষের সুযোগ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ জাতিসংঘের অভিবাসী সমন্বয়কের

তুমি সবসময় নেতিবাচক ভাবো কেন? ট্রাম্পের হতাশা ও ইসরায়েল-হামাসের শান্তিনিপাত

গাজা যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের ওপর হামাসের অর্ধেক সম্মতি অঙ্গীকারের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজে সেটিকে একটি ইতিবাচক উন্নতি হিসেবে দেখছেন। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিষয়টিকে পুরোপুরি ভিন্নভাবে দেখছেন। এই মতভেদের কারণেই দুজনের মধ্যে এক উত্তপ্ত ফোনালাপের ঘটনা ঘটে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, গেল শুক্রবার হামাস যখন ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় অর্ধেক সম্মতি জানায়, তখন ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ফোন করে বলেন, এটি খুবই ইতিবাচক এক পদক্ষেপ। এর উত্তরে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটা কোন ব্যাপারই নয়, এর মাধ্যমে কিছুই হয়নি। এর কোনও মূল্যই নেই।’ এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্প বেশ অপমানিত হয়ে উঠেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, তুমি সবসময় কেন এত নেতিবাচক।’ এছাড়াও তিনি আরেকটি অশালীন ভাষা ব্যবহার করেন। পরে ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে বলেন, ‘এটা একটা বিজয়। এই জয় গ্রহণ করো।’ একজন মার্কিন কর্মকর্তা এক্সিওসকে জানান, এই কথোপকথন দেখিয়েছে যে, নেতানিয়াহুর আপত্তির পরও ট্রাম্প কিভাবে যুদ্ধ শেষ করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং হামাসের সঙ্গেও চুক্তি চূড়ান্ত করতে চান। হামাস তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়াতে জানিয়েছে, তারা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি, তবে যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। অন্যদিকে নেতানিয়াহু তার ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের বলেন, তিনি হামাসের প্রতিক্রিয়াকে ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ‘প্রত্যাখ্যান’ হিসেবে দেখছেন। তিনি চান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে এগোতে যাতে হামাসের প্রতিক্রিয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা না হয়। তবে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ভিন্ন। তিনি আশঙ্কা করছিলেন, হামাস সম্ভবত পরিকল্পনাটিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করবে। তাই অর্ধেক সম্মতিকে তিনি একটি ‘চুক্তির সম্ভাবনা’ হিসেবে দেখতে থাকেন। দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফোনালাপে নেতানিয়াহুর শীতল প্রতিক্রিয়া ট্রাম্পকে হতাশ করে তোলে। এতে তিনি কড়া সুরে বলেন, ‘আমি নেতানিয়াহুকে বলেছিলাম, এটি তোমার জয়ের সুযোগ। শেষ পর্যন্ত তার রাজি হওয়াই অপরিহার্য, যদি আমার সঙ্গে থাকো।’ ফোনালাপের কিছু সময় পরে ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় বিমান হামলা বন্ধের আহ্বান জানালে, তিন ঘণ্টা পর নেতানিয়াহু বিমান হামনা বন্ধের নির্দেশ দেন। যদিও পরে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেন, ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর অবস্থান এখন পুরোপুরি এক। নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বার্তায় ট্রাম্পের প্রশংসা করে তার বক্তব্যের সঙ্গে নিজের অবস্থান মেলানোর চেষ্টা করেন। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই ফোনালাপে পরিস্থিতি ছিল ‘উত্তপ্ত ও কঠিন’। তারপরও শেষ পর্যন্ত দুই নেতা সমঝোতায় পৌঁছাতে সক্ষম হন। এর মধ্যে একজন মন্তব্য করেন, ‘অবশেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তি চান, সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসন ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য।’ হোয়াইট হাউস এর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। শনিবার ট্রাম্প আবারো দুই পক্ষকে দ্রুত চুক্তিতে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং হামাসকে সতর্ক করে দিয়েছেন—যদি তারা বিলম্ব করে, তাহলে পুরো চুক্তিই বাতিল হয়ে যাবে। একইদিনে ইসরায়েল গাজার কিছু অংশ থেকে প্রাথমিক সেনা প্রত্যাহারের বিষয়েও সম্মত হয়। সোমবার মিশরে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হবে, যেখানে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনার অংশ নেবেন।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

দৌলতপুরে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান, অবৈধ জাল জব্দ ও জেলেকে জরিমানা

তুমি সবসময় নেতিবাচক ভাবো কেন? ট্রাম্পের হতাশা ও ইসরায়েল-হামাসের শান্তিনিপাত

প্রকাশিতঃ ১০:৫৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

গাজা যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের ওপর হামাসের অর্ধেক সম্মতি অঙ্গীকারের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজে সেটিকে একটি ইতিবাচক উন্নতি হিসেবে দেখছেন। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিষয়টিকে পুরোপুরি ভিন্নভাবে দেখছেন। এই মতভেদের কারণেই দুজনের মধ্যে এক উত্তপ্ত ফোনালাপের ঘটনা ঘটে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, গেল শুক্রবার হামাস যখন ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় অর্ধেক সম্মতি জানায়, তখন ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ফোন করে বলেন, এটি খুবই ইতিবাচক এক পদক্ষেপ। এর উত্তরে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটা কোন ব্যাপারই নয়, এর মাধ্যমে কিছুই হয়নি। এর কোনও মূল্যই নেই।’ এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্প বেশ অপমানিত হয়ে উঠেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, তুমি সবসময় কেন এত নেতিবাচক।’ এছাড়াও তিনি আরেকটি অশালীন ভাষা ব্যবহার করেন। পরে ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে বলেন, ‘এটা একটা বিজয়। এই জয় গ্রহণ করো।’ একজন মার্কিন কর্মকর্তা এক্সিওসকে জানান, এই কথোপকথন দেখিয়েছে যে, নেতানিয়াহুর আপত্তির পরও ট্রাম্প কিভাবে যুদ্ধ শেষ করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং হামাসের সঙ্গেও চুক্তি চূড়ান্ত করতে চান। হামাস তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়াতে জানিয়েছে, তারা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি, তবে যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। অন্যদিকে নেতানিয়াহু তার ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের বলেন, তিনি হামাসের প্রতিক্রিয়াকে ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ‘প্রত্যাখ্যান’ হিসেবে দেখছেন। তিনি চান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে এগোতে যাতে হামাসের প্রতিক্রিয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা না হয়। তবে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ভিন্ন। তিনি আশঙ্কা করছিলেন, হামাস সম্ভবত পরিকল্পনাটিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করবে। তাই অর্ধেক সম্মতিকে তিনি একটি ‘চুক্তির সম্ভাবনা’ হিসেবে দেখতে থাকেন। দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফোনালাপে নেতানিয়াহুর শীতল প্রতিক্রিয়া ট্রাম্পকে হতাশ করে তোলে। এতে তিনি কড়া সুরে বলেন, ‘আমি নেতানিয়াহুকে বলেছিলাম, এটি তোমার জয়ের সুযোগ। শেষ পর্যন্ত তার রাজি হওয়াই অপরিহার্য, যদি আমার সঙ্গে থাকো।’ ফোনালাপের কিছু সময় পরে ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় বিমান হামলা বন্ধের আহ্বান জানালে, তিন ঘণ্টা পর নেতানিয়াহু বিমান হামনা বন্ধের নির্দেশ দেন। যদিও পরে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেন, ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর অবস্থান এখন পুরোপুরি এক। নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বার্তায় ট্রাম্পের প্রশংসা করে তার বক্তব্যের সঙ্গে নিজের অবস্থান মেলানোর চেষ্টা করেন। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই ফোনালাপে পরিস্থিতি ছিল ‘উত্তপ্ত ও কঠিন’। তারপরও শেষ পর্যন্ত দুই নেতা সমঝোতায় পৌঁছাতে সক্ষম হন। এর মধ্যে একজন মন্তব্য করেন, ‘অবশেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তি চান, সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসন ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য।’ হোয়াইট হাউস এর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। শনিবার ট্রাম্প আবারো দুই পক্ষকে দ্রুত চুক্তিতে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং হামাসকে সতর্ক করে দিয়েছেন—যদি তারা বিলম্ব করে, তাহলে পুরো চুক্তিই বাতিল হয়ে যাবে। একইদিনে ইসরায়েল গাজার কিছু অংশ থেকে প্রাথমিক সেনা প্রত্যাহারের বিষয়েও সম্মত হয়। সোমবার মিশরে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হবে, যেখানে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনার অংশ নেবেন।