বাংলাদেশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রের স্বার্থে এক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও দেশের সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেছেন, স্বৈরাচারী সরকারের দোসররা এখনো নির্বাচনকে বিঘ্নিত করার জন্য অশুভ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, এমন পরিস্থিতি অতীতের মতোই অশুদ্ধ ও হীন।
রবিবার দেশের অন্যতম নেতৃত্বাধীন সংগঠন বিএনপি প্রতিষ্ঠিৎ দলের জাতীয়তাবাদী সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের নবনির্বাচিত কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে এক দোয়া ও শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি এই মন্তব্য করেন। এর আগে, তিনি শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া ও ফাতেহ পাঠ করেছেন।
ফারুক বলেন, অতীতে স্বৈরাচারী সরকারের কাছে প্রকাশনা সংস্থাগুলো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল। তখন প্রকাশন자료 প্রকাশের সাহসও অনেক কম ছিল। কোনো বই প্রকাশ করতে হলে কলকাতায় পাঠিয়ে দিতে হতো। সত্যের প্রকাশের জন্য যা দরকার ছিল, সেই সাহস আজকের প্রজন্মের মধ্যে দেখা যায়নি। এছাড়াও, সরকার পাঠ্যপুস্তকেও স্বৈরাচারী কায়দায় দেশপ্রেমের ইতিহাস বিকৃতি করতে শুরু করে, যা গত ১৬ বছর ধরে জনগণের চোখে পরিলক্ষিত হয়েছে।
নবনির্বাচিত সংগঠনের সদস্যদের উদ্দেশ্যে ফারুক বলেন, যেনো নিজেদের মধ্যে স্বাধীনচেতা ও গণতান্ত্রিক মনোভাব বজায় রাখেন। দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে ও গণতন্ত্রের স্বার্থে সততা ও সাহস নিয়ে লিখন-style চালিয়ে যেতে হবে। অতিতের মতো আবারও প্রকাশনা ক্ষেত্রকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করলে ভবিষ্যতে তা সফল হবে না। গণতান্ত্রিক চর্চা ও স্বাধীনতা যেনো বজায় থাকে, সে জন্য সকল প্রকাশকদের সরকারের সহযোগিতা দরকার।
ফারুক আরও বলেন, আগামী জানুয়ারিতে সারাদেশে নতুন করে নেতৃত্বশীল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হোক এই প্রত্যাশা প্রকাশ করেন। তিনি আশ্বাস দেন, বিএনপির পক্ষ থেকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সত্যনিষ্ঠ ইতিহাসের ভিত্তিতে দেশের পুরানো সংগ্রাম ও বীরশ্রেষ্ঠদের অবদান তুলে ধরার জন্য উৎসাহিত করবেন।
একই সাথে, তিনি নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে গিয়ে দোয়া ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন। এই সংগঠন ও সদস্যদের প্রতি বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের দিক থেকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বানও জানান।
সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদার বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের মুক্তচিন্তার যাওয়া ধ্বংসের জন্য ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, দেশের ইতিহাস বিকৃতি, স্বাধীনতার চিত্র খাদ্য ও লেখালেখি দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে। দেশের বই শিল্পকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য কলকাতা থেকে ওই সব বই আনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রকাশনা খাতকে পুনরুজ্জীবিত করার দায়িত্ব তরুণ লেখকদের ও প্রকাশকদের। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঠিক টেক্সট ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সত্যিকার বর্ণনাগুলোর ভাবনা ও প্রকাশনা গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত ছড়াকার আবু সালেহ, সংস্কৃতিকর্মী মোশাররফ আহমেদ ঠাকুর, সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী জহুরুল ইসলাম বুলবুল, সহ-সভাপতি মো. মনিরুল হক, মো. হেলাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো. জহির দীপ্তি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন রশিদ, আরও নানা বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও প্রকাশক। সভার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মুক্তচিন্তা প্রচার ও যাত্রা আরও সুসংহত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
শ্রীমঙ্গল২৪ ডেস্ক 















