লেবাননে সফরকালে ক্যাথলিক খ্রিস্টধর্মের প্রধান ধর্মগুরু পোপ লিও ঘোষণা করেছেন, হিজবুল্লাহর জন্য অস্ত্র ত্যাগ করে জাতীয় সংলাপে বসার পরামর্শ। তিনি বলেন, ভ্যাটিকান সব পক্ষের মাঝে সহিংসতা বন্ধ করে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাচ্ছে। তবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরাইলের লেবাননে হামলার বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না বলে স্পষ্ট করেছেন।
লেবাননের সফর শেষে গত মঙ্গলবার স্কাই নিউজ আরাবিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পোপ বলেন, ভ্যাটিকান সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন সহিংসতা পরিত্যাগ করে সংলাপে ফিরে আসে। তিনি আরও বলেন, চার্চ হিজবুল্লাহর জন্য অস্ত্র নিয়ে আলোচনা ও যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছে।
পোপ প্রকাশ করেছেন, বৈরুতে তার রাজনৈতিক বৈঠকগুলো মিডিয়া থেকে দূরে ছিল এবং মূলত অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক বিরোধগুলো কমানোর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত ছিল। যখন তাকে হিজবুল্লাহর পাঠানো চিঠির কথা জিজ্ঞাসা করা হয়, তখন তিনি জানান, তিনি সেই চিঠি পর্যালোচনা করেছেন, কিন্তু এ বিষয়ে কোন মতামত প্রকাশ করবেন না।
একই সময়ে, শনি দিনে হিজবুল্লাহ একটি চিঠি পাঠিয়ে পোপকে জানান, তারা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে চলমান ইসরাইলি হামলার নিন্দা করছে। ওই চিঠিতে তারা বলে, পোপের এই সফরকে সামনে রেখে তারা তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে যে, লেবাননের নানা ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান তাদের মূলনীতি। তারা আরও বলেছে, দেশের সেনাবাহিনী ও জনগণের পাশে থেকে যে কোনও আগ্রাসন ও দখলদারির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।
হিজবুল্লাহ বলেছে, ইসরাইলের আচরণ অগ্রহণযোগ্য, এবং আশা প্রকাশ করেছে যে, পোপ লিও এই সময়ে লেবাননের জনগণের পাশে দাঁড়াবেন ও অবিচার ও হামলার বিরুদ্ধে ন্যায্য কথা বলবেন।
দূরদৃষ্টিতে, হিজবুল্লাহর মহাসচিব শেখ নাইম কাসেম পোপের সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি চিঠি হস্তান্তর করা হয়েছে, যা প্রকাশ ছিল সম্পূর্ণ স্বচ্ছ। তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি পূর্ণরূপে অনুসরণ করা হয়েছে, যদিও ইসরাইল ধারাবাহিকভাবে লেবাননের ভেতর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁর আশা, পোপের উপস্থিতি লেবাননে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে এবং দেশকে আগ্রাসন থেকে মুক্ত করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করবে।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইসরাইলকে ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বরের মধ্যে লেবাননের সব এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে বলা হয়, কিন্তু এখনো তারা কিছু এলাকায় অবস্থান পরিবর্তন করেনি, যা জাতিসংঘের কাঠিন্য লঙ্ঘন। এর ফলে, ইসরাইল বারবার লেবাননের ভেতরে হামলা চালাচ্ছে, যা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শ্রীমঙ্গল২৪ ডেস্ক 




















