ভয়াবহ দুর্যোগের পর শ্রীলঙ্কায় মানবিক সংকট আরও গভীর হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সিদ্ধান্ত নেয় সরাসরি সমুদ্রপথে ২০০ টন মানবিক সহায়তা পাঠানোর। প্রথমে পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিল আকাশপথে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছানো, তবে ভারতের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়ায় তাদেরকে দীর্ঘ পথ ঘুরে সমুদ্রপথে এই সাহায্য পৌঁছাতে হয়েছে।
গত সপ্তাহে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ার পর শ্রীলঙ্কায় কমপক্ষে ৪৬৫ জন নিহত ও ৩৬৬ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক সহায়তা কামনা করেছেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে, ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ত্রাণবাহী সমুদ্রজাহাজটিকে বিদায় জানানো হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রীর প্রতিমন্ত্রী বিলাল আজহার কায়ানি ও শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার অ্যাডমিরাল রভীন্দ্র সি উইজেগুনারত্নে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ টেলিফোনে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে গভীর শোক এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি জানান, দুঃসময়ে প্রতিবেশী ও ভাইপ্রতিম দেশ হিসেবে পাকিস্তান সম্পূর্ণভাবে শ্রীলঙ্কার পাশে রয়েছে।
অপরদিকে, শ্রীলঙ্কার উদ্ধারকারীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকা গুলিতে প্রবেশের পর মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রায় ১৫ লাখ মানুষ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
স্থল, সামুদ্রিক ও হাওয়াই ঝড়ের প্রভাব দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিস্তৃত। এর মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা, থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল ও মালয়েশিয়ার উত্তর অংশ। এই সময়ে ব্যাপক মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও দু’টি পৃথক উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চার দেশের মোট মৃত্যু সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১,৩০০।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ ও সমুদ্রের উষ্ণতা বাড়ছে, যার ফলে বড় ধরনের ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাত আরও তীব্র হয়ে উঠছে। খবর জানিয়েছে জিও নিউজ।
শ্রীমঙ্গল২৪ ডেস্ক 




















