ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় এবং দামাল অভিনেত্রী দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। নব্বই দশকের শেষের দিকে তার অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু হয় এবং দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি ঢালিউডে রাজত্ব করে গেছেন। দীর্ঘ দিন ধরে পর্দা থেকে অনুপস্থিত থাকলেও তার ভক্তরা এখনো অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন, কবে তিনি আবার নিয়মিত অভিনয়ে ফিরবেন।
অপরদিকে, শোবিজ অঙ্গনে এখন নাটক, সিনেমা তৈরির চেয়ে অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব অনুষ্ঠানের মান ও পুরস্কারপ্রাপ্তদের যোগ্যতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন, প্রকাশ পাচ্ছে সমালোচনাও। সম্প্রতি এক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে মডেলদের পোশাকের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়। শুধু মডেল নয়, এসব ভুঁইফোড় অ্যাওয়ার্ড আয়োজন নিয়েও সমালোচনার ঝড় বইছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পাতায়।
শোবিজ অঙ্গনের প্রথম সারির তারকারাও এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন। চিত্রনায়ক ওমর সানীর পর এবার মুখ খোলেন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত ব্যক্ত করেছেন, ভুঁইফোড় অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের সঙ্গে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের ‘সিন্ডিকেট’ নিয়েও।
পূর্ণিমা বলেন, ‘অনেক সময় আমাকে বলা হয়—অ্যাওয়ার্ড নিতে আসো। আমি জিজ্ঞেস করি, কোন কিছুর জন্য? তারা বলে—সাধারণত। কিন্তু সত্যিই কি এই ধরনের অ্যাওয়ার্ড হয়? আমাকে কখনো আমন্ত্রণ করে উপস্থাপনা করার জন্য। তবে যেসব অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হচ্ছে, তাদের কোনো প্রাচীন পরিচয় বা স্বীকৃতি আমি জানি না। এসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও কারো নামেই আমি চিনি না। কী কারণে বা কোন কাজের জন্য এসব অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়, সেটাও আমি বুঝতে পারি না। এখানে প্রকৃত নামধারীদের দেখা মেলে না। তাই আমি যদি ডাকেও থাকি, আমি যাই না।’
অভিনয় চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এখনও অভিনয় করি। ভালো গল্প ও মানসম্মত চরিত্র পেলে আমি কাজ করতে রাজি। বিশেষ করে, এখন আমি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজের আগ্রহ দেখাচ্ছি।’ তবে এ প্রসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, ‘অভিনেত্রী হিসেবে ঢুঁকি দেওয়ার সময় আমি লক্ষ্য করেছি, সেখানে বড় একটি সিন্ডিকেট কাজ করে। বাইরের কাউকে সহজে সেখানে স্থান দেওয়া হয় না। যাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, তারাই সব সময় সুযোগ পায়। এ ছাড়া, মেধাবী অনেক শিল্পী আছেন, যারা ভালো কাজ করতে চাইছেন, কিন্তু তাদের উন্নতির পথে বাধা দেয়া হয়।’
সব অবস্তার পরেও পূর্ণিমা আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘যদি আমি মানসম্মত কাজ ও সম্মান পাই, আমি অবশ্যই ফিরে আসার জন্য প্রস্তুত। ভালো গল্প আর যথাযথ সম্মান পেলে আমি আবার কাজে ফিরে যাব।’
তিনি উল্লেখ করেন, কিছু ওটিটি প্রকল্প যেমন ‘মহানগর’, ‘কারাগার’ ও ‘গোলাম মামুন’ তাকে খুবই প ছন্দ হয়েছে। তিনি মনে করেন, এই ধরনের গল্পে কাজ করার সুযোগ থাকলে তাঁর অভিনয়ের প্রাণ আরেকটু জেগে উঠবে।
পূর্ণিমার আশা, যে কোনও প্ল্যাটফর্মে যদি অভিনয় করতে যায়, সেখানে অবশ্যই তার যোগ্যতা মূল্যায়ন হওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, শিল্পের মান রক্ষা করা এবং জনপ্রিয়তার পিছনে ছুটিই নয়, বরং শ্রম ও যোগ্যতার পরিচয় দেওয়াও জরুরি।’