ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত চট্টগ্রামের প্রায় চার শতাধিক কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত ও ৪ থেকে ৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন। এ কর্মসূচির মাধ্যমে তারা তাদের ছয় দফা দাবির পক্ষে সমর্থন জানান।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে চট্টগ্রামের ফৌজদার হাট এলাকায় এই মানববন্ধন শুরু হয়। প্রায় শতাধিক কর্মকর্তা সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের প্রতিবাদ জানান। এরপর তিনি লাগাতার অবরোধ চালিয়ে যান, যার কারণে মহাসড়কে দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। বিপুল যানবাহন ও মানুষের দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসী এবং যাত্রীদের।
অবরোধকারীরা অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৪০০ কর্মকর্তাকে অযৌক্তিকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে তারা মানবেতর জীবনযাপনে বসেছে এবং পরিবার নিয়ে দারুণ অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানায়, গত শুক্রবার (৩ অক্টোবর) তারা একটি সংবাদ সম্মেলন করে রবিবার থেকে অবিরাম কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। তবে শনিবার সকাল থেকেই তারা মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধের মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করে দেন।
অবরোধের নেতৃত্বে থাকা ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৪০০ জন কর্মকর্তাকে অযুক্তভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৫ হাজারের বেশি কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অমানবিক ও অন্যায়।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘চাকরিচ্যুত ও ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের দ্রুত পুনর্বহালের পাশাপাশি এই ছয় দফা দাবি মানা না হলে তারা আরো কঠোর আন্দোলনে যাবেন।’
অন্য একজন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকের কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে আমাদের বেতনের টাকা সহায়তা অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছে। আমরা এখন আমাদের অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ তুলতে পারছি না। উপরন্তু, তাদের আইডি কার্ডও ব্লক করে দেওয়া হয়েছে, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে আরো কঠিন করে তুলছে। চাকরি হারিয়ে আমরা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি।’
অর্থাৎ, তাদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:
১. চাকরির বিধি লঙ্ঘন করে অযৌক্তিকভাবে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের স্বপদে পুনর্বহাল করতে হবে।
২. প্রহসনমূলক পরীক্ষাগুলো বাতিল করে অবিলম্বে যেন অপ্রয়োজনীয় পুলিশি ব্যবস্থা ও ট্রান্সফার বন্ধ হয়।
৩. বৈষম্য ও রাজনীতি মুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
৪. শর্ত আরোপ করে পরীক্ষাসমূহ বন্ধ করতে হবে।
৫. চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের ওপর চালানো মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে এবং চাকরিতে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।
৬. তাদের বিরুদ্ধে করা জিডি ও সাইবার ক্রাইম মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।