১০:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয় আওয়ামী লীগের বিচারকাজের জন্য আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু জয়পুরহাটের কানাইপুকুর গ্রামে বিরল শামুকখোল পাখির অভয়ারণ্য শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়ার প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন সিইসির মনে অবস্থান: এবারের নির্বাচন জীবনশেষের সুযোগ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ জাতিসংঘের অভিবাসী সমন্বয়কের

ইসরায়েলের গাজায় ব্যাপক বিমান হামলা ও নিহতের সংখ্যা বাড়ছে

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েল ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালিয়েছে। এক দেশীয় বিবৃতিতে জানানো হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিমানরা এই সময়ের মধ্যে গাজার ১৭০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, যা সংহতি বজায় রেখে অব্যাহত থাকবে। এই অভিযানে গাজা সিটি ও এর উত্তরে আলামত দেখা গেছে তিনটি ডিভিশনের সৈন্যের। তারা কিছু ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করার পাশাপাশি একটি অস্ত্রাগার ধ্বংসের দাবি করলেও, দ্রুত এই দাবি প্রমাণের জন্য কোন প্রমাণ পেশ করেনি। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিশ্বনেতাদের অপ্রতিরোধ্য চাপের মধ্যেও ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে আরও ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন সাত নারী ও দুই শিশু। নুসেইরাত শরণার্থী ক্যাম্পে দিনের পর দিন আক্রান্ত হয়ে আহততাদের মধ্যে দুর্ভাগ্যবশত মারা গেছেন অনেকেই। আল-আহলি স্টেডিয়ামে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুতদের ওপর হামলায় নিহত হয়েছেন ১২ জন। নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আল-আহলি স্টেডিয়ামে ঘর কা‌টার সময় নিহত হওয়া ও শিশুসহ নারীদের মরদেহ। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করছে, তারা হামাসের দুই যোদ্ধাকে হত্যা করেছে, তবে অনুসন্ধানে তা সত্যাপূর্ণ মনে হয়নি। তারা আরও জানায়, শহরের কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ইসরায়েলি বাহিনী অগ্রসর হয়ে আঘাত হেনেছে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে। এখনো, হামাসের জিম্মিদের মুক্ত করাই তাদের মূল লক্ষ্য, পাশাপাশি এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর চূড়ান্ত পরাজয় নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। গাজার বড় শহর থেকে লাখো বসবাসকারী পালিয়ে গেছেন, যেখানে জাতিসংঘের এক সংস্থা ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তবে, ভয়াবহ মানবিক সংকট এখনো যুদ্ধের মূল কেন্দ্র। স্বাস্থ্য ও অন্যান্য জরুরী পরিষেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আরব ও মুসলিম দেশের নেতাদের সম্মেলনের ফাঁকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। এই পরিকল্পনায় গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধবিরতি আনা সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। গাজা হাসপাতালে জানানো হয়, গত বুধবার রাত থেকে ইসরায়েলি হামলার কারণে ৬০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সিভিল ডিফেন্স সূত্র জানায়, ফাইরাস মার্কেটের কাছে একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দিকে হামলায় এক তৃতীয়াংশ নিহতের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ছয় নারী ও নয় শিশু রয়েছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এ বিষয়ে কিছু তথ্য ব্লাইন্ড রিপোর্ট করে থাকলেও, ঘটনাস্থলের বিভিন্ন দৃশ্য দেখা যায়, যেখানে ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের ধূলিসাতে মরদেহ লোকজন সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে মোহাম্মদ হাজ্জাজের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন, যিনি বলেছেন, ‘ব্যাপক বোমাবর্ষণের ফলে শিশুসহ নারীদের মৃতদেহ ঘুমন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছি’। আল-আহলি হাসপাতালের বাইরে মরদেহ আনছে শোকসন্তপ্ত পরিবার। তারপরও, ইসরায়েলি সেনাদের দাবি, তারা হামাসের সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দক্ষিণ ও উত্তর-পশ্চিম অংশে ইসরায়েলি ট্যাংক দেখা যাচ্ছে। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তাল আল-হাওয়া হাসপাতালের বাইরে তাদের গাড়ি মোতায়েন করা হয়েছে এবং গুলিবর্ষণে অক্সিজেন সংকটে হাসপাতালে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আইডিএফ বলছে, হাসপাতালের এলাকায় কোনো হঠাত্্ হামলা হয়নি, তবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে। অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজায় ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ২১ দফা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন। নিউইয়র্কে সম্প্রতি এক বৈঠকে এই পরিকল্পনা আলোচনা হয়। আরব ও মুসলিম নেতাদের সাথে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষ হলে, আশা করা যায়, সামনের দিনগুলোতে শান্তির পথে বড় অগ্রগতি সম্ভব হবে। মূলবিন্দু হিসেবে، এই পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে— গাজার সকল জিম্মিকে অবিলম্বে মুক্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা, হামাসের প্রভাবমুক্ত প্রশাসন গঠন ও ইসরায়েলি সেনাদের ধীরে ধীরে প্রত্যাহার।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

দৌলতপুরে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান, অবৈধ জাল জব্দ ও জেলেকে জরিমানা

ইসরায়েলের গাজায় ব্যাপক বিমান হামলা ও নিহতের সংখ্যা বাড়ছে

প্রকাশিতঃ ০৮:১৭:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েল ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালিয়েছে। এক দেশীয় বিবৃতিতে জানানো হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিমানরা এই সময়ের মধ্যে গাজার ১৭০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, যা সংহতি বজায় রেখে অব্যাহত থাকবে। এই অভিযানে গাজা সিটি ও এর উত্তরে আলামত দেখা গেছে তিনটি ডিভিশনের সৈন্যের। তারা কিছু ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করার পাশাপাশি একটি অস্ত্রাগার ধ্বংসের দাবি করলেও, দ্রুত এই দাবি প্রমাণের জন্য কোন প্রমাণ পেশ করেনি। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিশ্বনেতাদের অপ্রতিরোধ্য চাপের মধ্যেও ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে আরও ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন সাত নারী ও দুই শিশু। নুসেইরাত শরণার্থী ক্যাম্পে দিনের পর দিন আক্রান্ত হয়ে আহততাদের মধ্যে দুর্ভাগ্যবশত মারা গেছেন অনেকেই। আল-আহলি স্টেডিয়ামে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুতদের ওপর হামলায় নিহত হয়েছেন ১২ জন। নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আল-আহলি স্টেডিয়ামে ঘর কা‌টার সময় নিহত হওয়া ও শিশুসহ নারীদের মরদেহ। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করছে, তারা হামাসের দুই যোদ্ধাকে হত্যা করেছে, তবে অনুসন্ধানে তা সত্যাপূর্ণ মনে হয়নি। তারা আরও জানায়, শহরের কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ইসরায়েলি বাহিনী অগ্রসর হয়ে আঘাত হেনেছে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে। এখনো, হামাসের জিম্মিদের মুক্ত করাই তাদের মূল লক্ষ্য, পাশাপাশি এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর চূড়ান্ত পরাজয় নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। গাজার বড় শহর থেকে লাখো বসবাসকারী পালিয়ে গেছেন, যেখানে জাতিসংঘের এক সংস্থা ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তবে, ভয়াবহ মানবিক সংকট এখনো যুদ্ধের মূল কেন্দ্র। স্বাস্থ্য ও অন্যান্য জরুরী পরিষেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আরব ও মুসলিম দেশের নেতাদের সম্মেলনের ফাঁকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। এই পরিকল্পনায় গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধবিরতি আনা সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। গাজা হাসপাতালে জানানো হয়, গত বুধবার রাত থেকে ইসরায়েলি হামলার কারণে ৬০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সিভিল ডিফেন্স সূত্র জানায়, ফাইরাস মার্কেটের কাছে একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দিকে হামলায় এক তৃতীয়াংশ নিহতের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ছয় নারী ও নয় শিশু রয়েছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এ বিষয়ে কিছু তথ্য ব্লাইন্ড রিপোর্ট করে থাকলেও, ঘটনাস্থলের বিভিন্ন দৃশ্য দেখা যায়, যেখানে ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের ধূলিসাতে মরদেহ লোকজন সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে মোহাম্মদ হাজ্জাজের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন, যিনি বলেছেন, ‘ব্যাপক বোমাবর্ষণের ফলে শিশুসহ নারীদের মৃতদেহ ঘুমন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছি’। আল-আহলি হাসপাতালের বাইরে মরদেহ আনছে শোকসন্তপ্ত পরিবার। তারপরও, ইসরায়েলি সেনাদের দাবি, তারা হামাসের সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দক্ষিণ ও উত্তর-পশ্চিম অংশে ইসরায়েলি ট্যাংক দেখা যাচ্ছে। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তাল আল-হাওয়া হাসপাতালের বাইরে তাদের গাড়ি মোতায়েন করা হয়েছে এবং গুলিবর্ষণে অক্সিজেন সংকটে হাসপাতালে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আইডিএফ বলছে, হাসপাতালের এলাকায় কোনো হঠাত্্ হামলা হয়নি, তবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে। অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজায় ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ২১ দফা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন। নিউইয়র্কে সম্প্রতি এক বৈঠকে এই পরিকল্পনা আলোচনা হয়। আরব ও মুসলিম নেতাদের সাথে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষ হলে, আশা করা যায়, সামনের দিনগুলোতে শান্তির পথে বড় অগ্রগতি সম্ভব হবে। মূলবিন্দু হিসেবে، এই পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে— গাজার সকল জিম্মিকে অবিলম্বে মুক্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা, হামাসের প্রভাবমুক্ত প্রশাসন গঠন ও ইসরায়েলি সেনাদের ধীরে ধীরে প্রত্যাহার।