০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয় আওয়ামী লীগের বিচারকাজের জন্য আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু জয়পুরহাটের কানাইপুকুর গ্রামে বিরল শামুকখোল পাখির অভয়ারণ্য সিইসির মনে অবস্থান: এবারের নির্বাচন জীবনশেষের সুযোগ শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়ার প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ জাতিসংঘের অভিবাসী সমন্বয়কের

শেয়ারবাজারে ফিরে এসেছে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা

দেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘ দিন ধরে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমে থাকলেও সম্প্রতি সেই প্রবণতায় কিছুটা পরিবর্তন দেখা গেছে। সেপ্টেম্বরে এসে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিকে, এই সময়ের মধ্যে ৪০টির মতো নতুন বিও অ্যাকাউন্ট যুক্ত হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীর আগ্রহের কিছুটা ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়। একইসঙ্গে স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাও সক্রিয়তা বাড়িয়েছে, যা শেয়ারবাজারের জন্য আশার সূচনা হিসেবে দেখা যায়।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও সিডিবিএলের সূত্রে জানা যায়, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিদেশি ও প্রবাসীদের নামে সক্রিয় বিও অ্যাকাউন্ট ছিল ৪৩ হাজার ৭৬১টি। তবে সেপ্টেম্বরে এসে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৩ হাজার ৮০১টি হয়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে, ২০২৩ সালের তুলনায় তাদের উপস্থিতি এখনো কম রয়েছে। গত বছর অক্টোবরে এই সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ৫১২টি, ফলে এক বছরের ব্যবধানে অপরিশোধিতভাবে কমে গেছে প্রায় ১১ হাজার ৭১১টি বিও অ্যাকাউন্ট।

অন্যদিকে, শুধু বিদেশি বিনিয়োগকারীরাই নয়, দেশি বিনিয়োগকরীরাও কিছুটা সক্রিয় হয়েছেন। আগস্ট মাসে দেশের বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ১০৪টি। যা সেপ্টেম্বরে বেড়ে ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৬৯৫টিতে পৌঁছায়। এই সময়ের মধ্যে, এক মাসে মোট ৬ হাজার ৫৯১টি বিও অ্যাকাউন্ট বৃদ্ধি পায়। তবে, বছর শুরুতে মোট বিও অ্যাকাউন্ট ছিল ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫৫১টি, আর এখন তা কমে ১৬ লাখ ৫২ হাজার ২২৭টিতে দাঁড়িয়েছে—অর্থাৎ, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে মোট ১ লাখ ২১ হাজার ৩২৪টি হিসাব কমেছে।

বিনিয়োগকারীর ধরন অনুযায়ী দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে পুরুষ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ হাজার ৫৭৮টি, নারী বিনিয়োগকারী বেড়েছে ১ হাজার ৪৯টি এবং কোম্পানি হিসেবে বিও অ্যাকাউন্ট বেড়েছে ১৯৯টি। তবুও, বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সূচক বা বাজারের মূলধন ইতিবাচক প্রভাব ফেলেনি।

আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সূচকের পারফরম্যান্সের উপর নজর দিলে দেখা যায়, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগস্টের শেষে ছিল ৫ হাজার ৫৯৪ পয়েন্ট। সেপ্টেম্বরের মধ্যে এটি নেমে আসে ৫ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে, অর্থাৎ এক মাসে সূচক কমেছে ১৭৯ পয়েন্ট।

বাজারের মূলধন কমে গেছে। আগস্টে ডিএসইর বাজারমূলধন ছিল ৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৮ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বরে নেমে এসেছে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৩ কোটি টাকায়—অর্থাৎ মোট ২ হাজার ৮৫ কোটির মতো কমে গেছে।

লেনদেনের পর্যায়ে, এক সময় প্রতিদিন হাজার কোটি টাকার লেনদেন হতো, এখন তা কমে গিয়ে ৬০০ কোটির নিচে চলে এসেছে। সেপ্টেম্বরের শেষ ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে, কোনো দিনই লেনদেন হাজার কোটি টাকার ওপরে গেছে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির এই প্রবণতা বাজারের জন্য ইতিবাচক সংকেত হলেও, এখনও মূল সমস্যা কাটেনি। সূচক ও মূলধনের পতন বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে, ফলে বাজারের স্বাভাবিক ঊর্ধ্বমুখী ধারা এখনও দৃশ্যমান হয়নি।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

দৌলতপুরে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান, অবৈধ জাল জব্দ ও জেলেকে জরিমানা

শেয়ারবাজারে ফিরে এসেছে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা

প্রকাশিতঃ ১০:৪৯:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

দেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘ দিন ধরে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমে থাকলেও সম্প্রতি সেই প্রবণতায় কিছুটা পরিবর্তন দেখা গেছে। সেপ্টেম্বরে এসে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিকে, এই সময়ের মধ্যে ৪০টির মতো নতুন বিও অ্যাকাউন্ট যুক্ত হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীর আগ্রহের কিছুটা ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়। একইসঙ্গে স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাও সক্রিয়তা বাড়িয়েছে, যা শেয়ারবাজারের জন্য আশার সূচনা হিসেবে দেখা যায়।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও সিডিবিএলের সূত্রে জানা যায়, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিদেশি ও প্রবাসীদের নামে সক্রিয় বিও অ্যাকাউন্ট ছিল ৪৩ হাজার ৭৬১টি। তবে সেপ্টেম্বরে এসে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৩ হাজার ৮০১টি হয়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে, ২০২৩ সালের তুলনায় তাদের উপস্থিতি এখনো কম রয়েছে। গত বছর অক্টোবরে এই সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ৫১২টি, ফলে এক বছরের ব্যবধানে অপরিশোধিতভাবে কমে গেছে প্রায় ১১ হাজার ৭১১টি বিও অ্যাকাউন্ট।

অন্যদিকে, শুধু বিদেশি বিনিয়োগকারীরাই নয়, দেশি বিনিয়োগকরীরাও কিছুটা সক্রিয় হয়েছেন। আগস্ট মাসে দেশের বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ১০৪টি। যা সেপ্টেম্বরে বেড়ে ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৬৯৫টিতে পৌঁছায়। এই সময়ের মধ্যে, এক মাসে মোট ৬ হাজার ৫৯১টি বিও অ্যাকাউন্ট বৃদ্ধি পায়। তবে, বছর শুরুতে মোট বিও অ্যাকাউন্ট ছিল ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫৫১টি, আর এখন তা কমে ১৬ লাখ ৫২ হাজার ২২৭টিতে দাঁড়িয়েছে—অর্থাৎ, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে মোট ১ লাখ ২১ হাজার ৩২৪টি হিসাব কমেছে।

বিনিয়োগকারীর ধরন অনুযায়ী দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে পুরুষ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ হাজার ৫৭৮টি, নারী বিনিয়োগকারী বেড়েছে ১ হাজার ৪৯টি এবং কোম্পানি হিসেবে বিও অ্যাকাউন্ট বেড়েছে ১৯৯টি। তবুও, বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সূচক বা বাজারের মূলধন ইতিবাচক প্রভাব ফেলেনি।

আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সূচকের পারফরম্যান্সের উপর নজর দিলে দেখা যায়, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগস্টের শেষে ছিল ৫ হাজার ৫৯৪ পয়েন্ট। সেপ্টেম্বরের মধ্যে এটি নেমে আসে ৫ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে, অর্থাৎ এক মাসে সূচক কমেছে ১৭৯ পয়েন্ট।

বাজারের মূলধন কমে গেছে। আগস্টে ডিএসইর বাজারমূলধন ছিল ৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৮ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বরে নেমে এসেছে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৩ কোটি টাকায়—অর্থাৎ মোট ২ হাজার ৮৫ কোটির মতো কমে গেছে।

লেনদেনের পর্যায়ে, এক সময় প্রতিদিন হাজার কোটি টাকার লেনদেন হতো, এখন তা কমে গিয়ে ৬০০ কোটির নিচে চলে এসেছে। সেপ্টেম্বরের শেষ ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে, কোনো দিনই লেনদেন হাজার কোটি টাকার ওপরে গেছে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির এই প্রবণতা বাজারের জন্য ইতিবাচক সংকেত হলেও, এখনও মূল সমস্যা কাটেনি। সূচক ও মূলধনের পতন বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে, ফলে বাজারের স্বাভাবিক ঊর্ধ্বমুখী ধারা এখনও দৃশ্যমান হয়নি।