বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সাবেক বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ৫২ বছরে পা রাখলেন। তার অনন্য সৌন্দর্য, মাধুর্য এবং আত্মবিশ্বাস এখনও পুরোনো থেকে নতুনের মাঝখানে যেন এক মূর্ত প্রতীক। এই অভিনেত্রীকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তার বয়স নির্দিষ্ট এক সংখ্যার ওপরে দাঁড়িয়ে। বরং তার জ্বলজ্বলে সৌন্দর্য ও দীপ্তি এখনও নব্বই দশকের সেই তরুণী ঐশ্বরিয়া রাই-এর মতোই যেন ঝলমলে। বয়স বাড়ছে, কিন্তু তার জোরে সৌন্দর্য, চার্ম এবং সম্ভাবনা কমেনি। তিনি প্রমাণ করেছেন, সত্যিকার সৌন্দর্য কখনোই ম্লান হয় না, এটি চোখে, মনেও, এবং মননে সবখানে জায়গা করে রাখে।
অভিনেত্রীর বয়স ৫১ পেরিয়ে গেলেও, সময় যেন তার প্রতি অদ্ভুতভাবে নির্দয় নয়। তার সৌন্দর্য ও আত্মবিশ্বাস এই প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণার নাম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা পরিবর্তিত হলেও, ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের নাম এমন এক উচ্চতায় অবস্থান করে, যা সময়কেও হার মানাতে সক্ষম। তার জন্মদিনে সামাজিক মাধ্যমে শুভেচ্ছার বন্যা বইছে, ভক্তরা বলছেন—ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন, সময় তোমার কাছে এখনো হার মানে না।
প্রথমবার পর্দায় দেখা যায় ১৯৯৭ সালে, তামিল নির্মাতা মনিরত্নমের ‘ইরুভার’ সিনেমার মাধ্যমে। একই বছর বলিউডের জন্যও তার পথচলা শুরু হয়, ‘ওর পেয়ার হো গয়া’ সিনেমার মাধ্যমে। তার ক্যারিয়ার শুরু ছিল ধীরে ধীরে, তবে ১৯৯৯ সালে ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ সিনেমায় অনন্য পারফরম্যান্স তাকে বলিউডের প্রথম সারিতে আনে। এরপর ‘তাল’, ‘দেবদাস’, ‘জোধা আকবর’, ‘গুরু’, ‘ধূম ২’, ‘রেইনকোট’ সিনেমায় অভিনয় করে তিনি যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে যান। বিশেষ করে ‘দেবদাস’ ছবিতে তার পারো চরিত্রের অনবদ্য অভিনয় আজও দর্শকদের হৃদয়ে স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।
ঐশ্বরিয়া রাই শুধুই বলিউডে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নিজের নাম করে নিয়েছেন। হলিউড ছবিতে যেমন ‘ব্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’ এবং ‘দ্য পিঙ্ক প্যান্থার ২’ এ কাজ করেছেন তিনি। কান চলচ্চিত্র উৎসবে তার উপস্থিতি এখন এক ঐতিহ্য, সবাই তাকে বিশ্ব সিনেমার একজন সম্মানিত মুখ হিসেবে চিনে।
অতিরিক্ত, তিনি লরিয়েল প্যারিসের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর হিসেবে পরিচিত। মানবতার জন্য তার সমাজসভাব্য উদ্যোগ ও দান-খয়রাত প্রশংসিত। তার নিজের প্রতিষ্ঠিত ‘ঐশ্বরিয়া রাই ফাউন্ডেশন’ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, অসহায় শিশু ও দরিদ্রদের জন্য কাজ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
ঐশ্বরিয়ার জন্ম কর্ণাটকের মঙ্গলুরুতে। ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল স্থপতি হওয়ার, কিন্তু ভাগ্য লিখেছিল অন্য গল্প। নব্বই দশকের শুরুতেই বিজ্ঞাপনচিত্র ও মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯৯৪ সালে মিস ওয়ার্ল্ড কাঁটাতে জয়লাভ করে তারকা খ্যাতি পান। এরপর থেকে তার টেলিভিশন ও সিনেমার জগতে উত্থান ঘটে। ২০০৭ সালে বলিউড তারকা অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। এই পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হন বলিউডের অন্যতম সম্মানিত পরিবার। ২০১১ সালে তাদের কন্যা আরাধ্যা’র জন্ম হয়। এর পর থেকে তিনি স্বামী ও সন্তানের পাশাপাশি ক্যারিয়ারের প্রতিও সমান মনোযোগ দিয়েছেন।
মাতৃত্বের কিছু দিন বিশ্রাম নিলেও, পরবর্তীতে আবার উজ্জ্বল হয়ে উঠেন ঐশ্বরিয়া। বিভিন্ন ছবিতে তার দক্ষতা ও আড়ম্বরপূর্ণ উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ‘জজবা’, ‘সর্বজিত’, ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’, এবং সাম্প্রতিক ‘পোন্নিয়িন সেলভান’ সিরিজে তার অভিনয় দর্শকদের মনোযোগ কেড়েছে। দক্ষিণী সিনেমার এই প্রিয় অভিনেত্রী নন্দিনী চরিত্রে তার ফুটিয়ে তোলা উপস্থিতি আবারও প্রমাণ করে দেন—অভিনয় থেকে তিনি কখনো দূরে যান না।
ঐশ্বরিয়া শুধুমাত্র সুন্দর মুখ নয়, তিনি এক অনুপ্রেরণার নাম। একবার একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, সৌন্দর্য মানে নিখুঁত হওয়া নয়, বরং নিজের অপ্রাপ্তি ও অসম্পূর্ণতাকেও ভালোবাসা। এই মনোভাবই তাকে আলাদা করে তোলে। তার চোখের মুগ্ধতা, কথার মধ্যে সংযম, আর আচরণের মধ্যে সৌজন্য সব মিলিয়ে তাকে এক জীবন্ত সৌন্দর্যের প্রতিমূর্তি করে তুলেছে।
																			
										
																শ্রীমঙ্গল২৪ ডেস্ক								 




















