প্রতিরোধ, প্রতিহিংসা ও কথামালার রাজনীতির বদলে বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের রাজনৈতিক ধারাকে পরিবর্তন করতে হবে বলে কঠোর মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘প্রত্যেক মা-বাবা চান তারা তাদের সন্তানের জন্য এক নিরাপদ ভবিষ্যত রেখে যেতে। প্রত্যেকের চাওয়া-পাওয়া ও প্রত্যাশা অনুযায়ী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আগামী দিনের জন্য স্পষ্ট রাজনৈতিক পরিকল্পনা ও কর্মসূচি গ্রহণ করছে, যা দেশের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মের জন্য এক নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হলে আমাদের প্রচলিত রাজনীতির ধারাকে ছাড়াতে হবে। কারণ, প্রতিরোধ, প্রতিহিংসা এবং কথামালার রাজনীতি আর বয়ে আনে সমাধান নয়, বরং গঠনমূলক ও বাস্তবমুখী পরিকল্পনার মাধ্যমেই আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন সম্ভব।’
তারেক রহমান বলেন, ‘বিশ্ব এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) যুগে প্রবেশ করছে। এই যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের পিছিয়ে থাকাটা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিএনপি ইতোমধ্যেই বিভিন্ন সেক্টর নির্ধারণ করে সুনির্দিষ্ট, চিন্তাশীল পরিকল্পনা গ্রহণ করছে, যেন আমরা বিশ্ব পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলাতে পারি।’
অতঃপর, তিনি জানান, ‘শিক্ষার্থী যারা স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করেছেন বা কোনওভাবে পড়াশোনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের জন্য বাস্তবসম্মত প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যাতে চাকরির অভাবে তারা বেকার জীবন কাটাতে না হয়। এই লক্ষ্যে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ব্যাবহারিক ও কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বাড়ানো হচ্ছে, যার মাধ্যমে তারা কর্মক্ষম ও স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে।’
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করছে। এই নির্বাচন দেশের জনগণের জন্য দেড় দশকের বেশি সময় পর তাদের নির্বাচিত এজেন্ডা ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের সুযোগ সৃষ্টি করবে। তবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে কিছু ফ্যাসিবাদবিরোধী দলের সদস্যের বক্তব্যগুলো গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
শেষে তাঁর আহ্বান, ‘দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্তের প্রতি আমি বলব—দূরত্ব সৃষ্টি হলে দেশ ও রাজনীতিতে ফ্যাসিস্ট শক্তিগুলোর পুনর্বাসনের পথ প্রশস্ত হবে, যা দেশের অগ্রগতির জন্য ক্ষতিকর। তাই সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে, যেন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি সৃষ্টি না হয়।’