আগামী রমজানের আগে দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি উল্লেখ করেছেন, এই নির্বাচন সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলে বিগত ষোলো বছর ধরে দেশের ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার সম্পূর্ণভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষম হবেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠের পর তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, দেশের মানুষ এখনো নানা রকম অধিকার থেকে বঞ্চিত। তিনি বলেন, দেশের শত্রু ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের দিক থেকে আমরা এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে আছি। আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, যা এখনো পুরোপুরি অর্জিত হয়নি। তবে আমি বিশ্বাস করি, খুব দ্রুত রমজানের আগেই দেশের মানুষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে পাবেন, যেখানে তারা দীর্ঘ ষোলো বছর পর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে সক্ষম হবেন।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের বিভিন্ন শর্ত পূরণের জন্য যেমন: দেশের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা অনুভূতি সৃষ্টি, আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং ন্যায্য বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও সম্ভব হবে। এগুলো দেশের মানুষের জীবনে পরিবর্তন এনে দেশের প্রগতি এগিয়ে নেওয়ার জন্য জরুরি।
রিজভী বলেন, ‘আদালত যেন অসহায় মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যেখানে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এই লক্ষ্য পূরণে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। মানবতার দর্শন ও দ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের অনুপ্রেরণা। তিনি ছিলেন একজন মানবতা, প্রেম ও দ্রোহের কবি। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম, নব্বইয়ের গণআন্দোলন ও বছরখানেক আগে দুনিয়াজোড়া গণঅভ্যুত্থানে যার গান ও কবিতা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সংগ্রাম করতে উৎসাহিত করেছে তাঁর গানের শক্তি।
রিজভী আরও বলেন, ‘স্বৈরশাসনের বুকের ওপর বুলেটের সামনে নির্বিঘ্নে দাঁড়িয়ে থাকার সাহস পেতাম, কারণ আমাদের কণ্ঠে ছিল কবি কাজী নজরুলের গান ও কবিতা। যখনই দেশের মানুষ অধিকারহারা হত, তখনই তাঁদের ঐক্যবদ্ধ করে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রেরণা জুগিয়ে আসতেন তিনি।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘ঔপনिवেশিক শক্তির বিরুদ্ধে তিনি তার শানিত কলম চালাতে দ্বিধা করেননি। তার কবিতা, গান ও সাহিত্যচেতনা আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই চেতনা ধারণ করেই আমরা নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি, যা জুলাই গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্পষ্টতঃ প্রকাশ পেয়েছে।